প্রতিদিনই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে এসব সন্ত্রাসীর সশস্ত্র মহড়ার ভিডিও। প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে সন্ত্রাসীরাই অস্ত্র চালানোর ভিডিও ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এখন পর্যন্ত র্যাব ও পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করলেও বাকিরা রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বাসার ছাদে দাঁড়িয়ে দোনালা বন্দুক থেকে গুলি ছুড়ে সশস্ত্র মহড়া দিচ্ছে কথিত যুবলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী ওরফে জিকু। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি নিজের অনুসারীদের দিয়ে জিকু নিজেই ধারণ করান। ৩০ আগস্ট চন্দনাইশে ছাত্রলীগের শোক দিবসের অনুষ্ঠানে হামলার অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি এ জিকু। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলেও তার সহযোগীরা রয়ে গেছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। এমনকি জিকুকে আদালতে হাজির করার সময়েও তার অনুসারীরা মহড়া দিয়ে গেছে।
অবশ্য জিকুর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে আরেক কথিত যুবলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন ওরফে সুজনের গুলি করার ছবি। চট্টগ্রামের এক ফুল ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর ৩০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়ার অভিযোগে মামলাও রয়েছে সুজনের বিরুদ্ধে। ঢাকা থেকে সহযোগী সঞ্জুসহ র্যাবের হাতে আটক হওয়ার পর তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দুটি বিদেশি পিস্তল। নির্যাতনের শিকার ফুল ব্যবসায়ী আবদুল মাবুদ বলেন, গিয়াসউদ্দিন সুজন, লিয়াকতসহ আরও ১০ থেকে ১২ জন ছিল। আমাকে বলেছে, এখানে ব্যবসা করতে হলে তোকে ৩০ লাখ টাকা দিতে হবে। তারপর আমাকে রড দিয়ে মারধর করে তারা।
সিএমপির খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনউজ্জামান বলেন, এজাহার বিশ্লেষণ করে দেখা যায় চন্দনাইশে পারস্পারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে এ ঘটনাটি তৈরি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এক সময়ের বিএনপি এবং পরবর্তীতে এলডিপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল কথিত যুবলীগ নেতা গিয়াস উদ্দিন সুজনসহ তার অনুসারীরা। আর সাবেক যুবদল নেতা জিকু বর্তমানে যুবলীগের একটি অংশের নেতা। এ নিয়ে চরম বিব্রতকর অবস্থায় সরকারি দলের নেতারাও।
চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, যারা দলের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত, যাদের কারণে দলে ভাবর্মূতি নষ্ট হচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে আমাদের কথা জিরো টলারেন্স, সে যেই হোক। অবশ্য সশস্ত্র মহড়ার সঙ্গে জড়িত সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে চন্দনাইশে আওয়ামী লীগ ৩টি, যুবলীগ ২টি এবং ছাত্রলীগ ৪টি ভাগে বিভক্ত।