শাটডাউন এড়াতে দ্বিদলীয় বিল পাস করেছে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ। মার্কিন সরকার শাটডাউন হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে প্রতিনিধি পরিষদ মূলত একটি স্বল্পমেয়াদী তহবিল চুক্তিতে সম্মত হয়েছে।
এর মাধ্যমে অল্পের জন্য শাটডাউন এড়ালো যুক্তরাষ্ট্র। এটি পাস না হলে স্থানীয় সময় শনিবারের পর (১ অক্টোবর মধ্যরাত) বন্ধ হয়ে যেতে পারত যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম। যা মূলত শাটডাউন হিসেবে পরিচিত।
রোববার (১ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার শাটডাউন হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদ একটি স্বল্পমেয়াদী তহবিল চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। এই বিলের মাধ্যমে আগামী নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সরকারকে অর্থায়ন করা যাবে। কিন্তু এই বিলে ইউক্রেনের জন্য কোনও নতুন সহায়তা অন্তর্ভুক্ত নেই।
প্রতিনিধি পরিষদে ৩৩৫-৯১ ভোটে এটি অনুমোদিত হয়। মূলত বিরোধী রিপাবলিকানদের চেয়ে ডেমোক্র্যাট সদস্যরা এটিকে বেশি সমর্থন করেছেন।
বিবিসি বলছে, প্রতিনিধি পরিষদে অনুমোদিত এই বিলটি এখন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের চেম্বারেও অনুমোদিত হতে হবে। তবে এটি সেখানে সহজেই পাস হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর এরপর এটিতে স্বাক্ষর করে একবার আইনে পরিণত করলে তা মার্কিন সরকারের ফেডারেল পরিষেবাগুলোতে সম্ভাব্য ব্যাঘাত এড়াতে সহায়তা করবে।
এদিকে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটরা শাটডাউন এড়ানোকে জয় বলে অভিহিত করেছেন। বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, প্রায় ২০৯ জন ডেমোক্র্যাট এই বিলটিকে সমর্থন করেছেন। অন্যদিকে এই বিলটি সমর্থনকারী রিপাবলিকানদের সংখ্যা ১২৬ জন।
পরে ডেমোক্র্যাটরা শাটডাউন এড়ানোর এই ফলাফলটিকে জয় বলে বর্ণনা করেন। অবশ্য বিল পাস হওয়ায় নিজের দলের কট্টরপন্থিদের কাছ থেকে চাপের মুখে পড়েছেন রিপাবলিকান হাউস সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতা কেভিন ম্যাকার্থি।
মূলত কেন্দ্রীয় সরকারকে অর্থায়নের একটি বিল পাস হওয়া নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এটি পাস না হলে শনিবারের পর (স্থানীয় সময় ১ অক্টোবর মধ্যরাত) বন্ধ হয়ে যেতে পারত যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম। যা দেশটিতে ‘শাটডাউন’ হিসেবে পরিচিত।
সরকারি ব্যয় মেটানোর জন্য প্রতিবছর ১ অক্টোবর নতুন অর্থবছরের জন্য অর্থ বরাদ্দের অনুমোদন দিয়ে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের আইন পরিষদের উচ্চকক্ষ সিনেট ও নিম্নকক্ষ কংগ্রেস। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল রিপাবলিকান পার্টির নিয়ন্ত্রণে থাকা কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ অর্থ বরাদ্দের বিষয়টি আটকে রেখেছিল। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কাছে তারা সরকারি ব্যয় অনেকাংশে হ্রাস করার দাবি জানায়। তবেই নতুন অর্থবছরের অর্থ বরাদ্দের অনুমোদন দেওয়ার কথা জানিয়েছিল তারা।
অন্যদিকে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে মাত্র ১ আসনের ব্যবধানে এগিয়ে আছে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি। আর কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে রিপাবলিকানদের দখলে। ফলে সরকারকে সচল রাখতে হলে দুই দলকে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হতো। সেই মতো সরকারের শাটডাউন এড়াতে শেষমুহূর্তে দ্বিদলীয় বিল পাস করল হাউস।
অবশ্য আপাতত শাটডাউন এড়ানো গেলেও রিপাবলিকানদের একটি অংশের দাবি, সরকারি ব্যয় অনেক কমাতে হবে। এমনকি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া ইউক্রেনকে সহায়তা কমিয়ে দেওয়ার দাবিও করেছেন তারা।