জাতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ অমীমাংসিত বিষয়গুলোতে ঐকমত্য গঠনের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে কিছু কিছু বিষয়ে ছাড় দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
আজ রোববার (২২ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার পঞ্চম দিনের প্রারম্ভিক বক্তব্যে এ অনুরোধ জানান আলী রীয়াজ।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি একটি বিশেষ পরিস্থিতির কারণে। এ পরিস্থিতির পেছনে ১৬ বছরের সংগ্রাম, হাজার খানেক মানুষের আত্মদান রয়েছে। সেই সঙ্গে নানান রাজনৈতিক দলের কর্মীরাও প্রাণ দিয়েছেন, নিপীড়িত হয়েছেন। কাজগুলো না হলে আমরা এখানে আসতে পারতাম না, এ কথাটি বিবেচনায় রেখে কোন জায়গায় আমরা একমত হতে পারি, কোন জায়গায় আমরা কতদূর এগিয়ে যেতে পারি, সেটা ভেবে আপনারা একটু ছাড় দেওয়ার জায়গায় আসুন।’
আলী রীয়াজ বলেন, ‘অনেকটা এগিয়ে এসেছেন, আরেকটু আগান। আরেকটু এগোলেই দ্রুত জুলাই সনদ করার মাধ্যমে এ আলোচনা শেষ করতে পারি।’
আজকের আলোচ্যসূচিতে ছিল প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ, রাষ্ট্রের মূলনীতি ও সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণকল্পে স্বতন্ত্র কমিটি গঠন।
রাষ্ট্রপতির নির্বাচন প্রক্রিয়া, প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ ও জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল বা এনসিসি গঠনের নিয়ে এখনও সম্পূর্ণভাবে ঐকমত্য গড়ে ওঠেনি জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেন, জুলাই সনদ তৈরির লক্ষ্যে যে বিষয়গুলো এখনো মীমাংসা হয়নি সেগুলো নিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে কিছু ছাড় দিন।
নীতি নির্ধারক পর্যায়ে আলোচনার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর অনুরোধ সাপেক্ষে আগামী সোমবার ও মঙ্গলবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক মুলতবি থাকবে জানিয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘এসব বিষয়ে কমিশনেরও আলোচনার জন্য কিছুটা সময় প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করছি।’
আজ বেলা ১১টা থেকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে পঞ্চম দিনের মতো ৩২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা করতে বৈঠকে বসে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩২টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে।
আগামী বুধবার (২৫ জুন) আবারও রাজনৈতিক দলগুলোর শোঞে আলোচনায় বসার কথা রয়েছে জাটিয় ঐকমত্য কমিশনের।