বিতর্ক পিছু ছাড়েনি এবার কাতার বিশ্বকাপও। বিশ্বকাপ আয়োজনে দারুণ সেজে ওঠেছে কাতার। দেশটির পাঁচটি শহরে আটটি স্টেডিয়াম সাজানো হয়েছে। আর সেখানে পরিকাঠামো নির্মাণে যেভাবে অভিবাসী শ্রমিকদের ব্যবহার করা হয়েছে তা নিয়ে বহু দিন থেকেই বিশ্বে সমালোচনা চলেছে। বহু শ্রমিক মারা গিয়েছেন এই কাজটি করতে গিয়ে। তাদের যে পরিকাঠামোর মধ্যে রাখা হয়েছিল সেটাও সমালোচনার ঊর্ধ্বে ছিল না।
অভিবাসী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে পদে পদে এই যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়ে বার বার প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বিশ্বকাপ ফুটবল এই গ্রহের ক্রীড়াদুনিয়ার ‘গ্রেট শো’গুলোর অন্যতম। ২০ নভেম্বর মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতারে শুরু হচ্ছে এই ইভেন্ট। কিন্তু বিশ্বকাপ ফুটবলের ২২তম আসর বসার আগেই বিতর্কের গাড় অন্ধকার জমে উঠেছে সেখানে। কিন্তু সেই অন্ধকারেও আলো আছে। আলো এনেছে নেদারল্যান্ডস।
শুক্রবার নেদারল্যান্ডসের কোচ লুই ফন গাল অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। জানা গিয়েছে, আগামী ১৭ নভেম্বর নেদারল্যান্ডস ফুটবল দল ২০ জন অভিবাসী শ্রমিকের সঙ্গে দেখা করবে। তাদের অবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেবেন ফুটবলাররা। খেলোয়াড়দের একটি অনুশীলন-সেশনে উপস্থিত থাকার সুযোগও পাবেন শ্রমিকরা। কেন কাতারের অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়ে এত হইচই? কারণ, কাজ করতে গিয়ে তাদের মৃত্যু। গত বছরেই গার্ডিয়ানের মতো সংবাদমাধ্যমে এসংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশিত হয়েছিল।
সেখানে বলা হয়েছিল, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা থেকে কাতারে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ছয় হাজারের মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে এসেছিল। শুধু ২০২১ সালেই মারা গিয়েছিলেন ৫০ জন বিদেশি শ্রমিক এবং গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন ৫০০ জনের মতো। ইংল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্সসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বিষয়টি নিয়ে তুমুল প্রতিবাদ হয়েছে। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও কাতারের অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ার বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। গত বছর মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিবেদনে কাতারের অভিবাসী শ্রমিকদের দুর্দশার চিত্র ওঠে এসেছিল। যদিও কাতারের তরফে জানানো হয়েছিল, এসব তথ্য বা খবর বিভ্রান্তিকর।