জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ এখনও বেঁচে আছেন সিনেমাপ্রেমীদের হৃদয়ে। সেইসঙ্গে বেঁচে আছে তার মৃত্যুরহস্য। সত্যিই কি আত্মহত্যা করেছেন সালমান? আজও উত্তর খুঁজে ফেরেন তার বাংলা সিনেমার দর্শকরা। এবার তার মৃত্যু নিয়ে মুখ খুললেন সালমানের সাবেক স্ত্রী সামিরা।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সামিরা বলেন, ‘আত্মহত্যা যারা করে, তারা তো কিছু বলে করে না। এখন নীলা চৌধুরী বারবার বলেন, সামিরাকে কেন রিমান্ডে নেওয়া হয় না। একটা বাসায় একটা বাচ্চা যখন আত্মহত্যা করে, সে বাচ্চার মা–বাবাকে কি আমরা উঠিয়ে নিয়ে চলে যাই? তাহলে আমাকে কেন উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে? ইট ইজ সুইসাইড।’
এরপর সামিরা বলেন, ‘ও (ইমন) মেন্টালি সুইসাইডাল বাই নেচার। এর আগে তিনবার সুইসাইডের চেষ্টা করেছে। মেট্রোপলিটন হাসপাতালের রেকর্ড চেক করলে জানা যাবে। ওখানে দুবারের রেকর্ড আছে। আরেক হাসপাতালে একবার আছে। তিনটাই আমার বিয়ের আগে। তিনটা ঘটনাই আমি জানি। একবার মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে করেছিল। আরেকবার আমাকে বিয়েতে রাজি করানোর জন্য করেছে। আরেকবার ওর কিছু একটা হয়েছিল, সেটার জন্যও করেছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটা কথা বলতে চাই, ইমন কিন্তু ছবিতে ক্যারিয়ার করতে চায়নি। সে পড়াশোনা করতে চেয়েছিল। কিন্তু পড়াশোনা যখন এসএসসি, তখন একটা ঘটনার কারণে, এরশাদ (হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ)–সংক্রান্ত, নীলা চৌধুরীকে নিয়ে, সেই ঘটনায় ওই সময় নীলা চৌধুরী জেলেও যান, ময়মনসিংহ কারাগারে ছিলেন। ইমন কিন্তু একদিনও মাকে দেখতে যায়নি জেলে। কেন? তখন তো ওর লাইফে আমি নাই। আমার তো ১৯৯২ সালের ২০ ডিসেম্বর বিয়ে হয়েছে। আর এই ঘটনা জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চের দিকের। ইমন কিন্তু তাঁর মাকে মা, আম্মা এসব ডাকত না। মহিলা বলে ডাকত। আমাদের সামনে অবশ্য ওভাবে বলত না। শুটিং সেটে যখন নীলা চৌধুরী যেতেন, তখন ইমন বলত, মহিলা আসছে। ডলি জহুর আন্টি একদিন সেটে থাকা অবস্থায় এমন ঘটনা ঘটেছিল। তখন বকা দিয়ে ইমনকে বলেছিল, “তুই এভাবে ডাকছিস কেন? তোর তো মা হয়।” ইমন তখন হেসে উড়িয়ে দিয়েছে।’
সবশেষে সালমানের সাবেক এ স্ত্রী বলেন, ‘ইমনের মনে অনেক কষ্ট আগে থেকেই ছিল। ইমন অনেক কিছু দেখে বড় হয়েছিল, যেগুলো ওর দেখার দরকার ছিল না। এগুলো নিয়ে বাচ্চাদের হয় কি, আমরা এখন যেমন হিউম্যান সাইকোলজি নিয়ে অনেক পড়াশোনা করি, তখন তো এগুলো করতাম না। তখন আমাদের কোনো কাউন্সেলিংয়ের সুযোগও ছিল না। ছিল না রিহ্যাবিলিটিশেনরও। এখন রিহ্যাব আছে, কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা আছে। আমরা তেমন কিছু অনুভব করলে কারও সঙ্গে আলাপ করে তা ভাঙার চেষ্টা করি, বোঝার চেষ্টা। তখন তো ইমন এসব কাউকে বলতে পারেনি। সালমান শাহ হওয়ার পর তো আরও বলতে পারেনি। যাকে বলবে, এটা নিউজ হয়ে যাবে।’