কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ বন্দুক হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় পাকিস্তানকে দায়ী করায় দিল্লি-ইসলামাবাদের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, সীমান্তে সেনাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার গুলি বিনিময় হয়েছে। অন্যদিকে, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত। এমন অবস্থায় পেহেলগামে ভয়াবহ হামলার তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে।
রোববার (২৭ এপ্রিল) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে এবং আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদনের তথ্যমতে, হামলাকারীরা কোকেরনাগের জঙ্গল হয়ে ২০ থেকে ২২ ঘণ্টা হেঁটে পেহেলগামে বৈসারন উপত্যকায় পৌঁছেছিল।
হামলার আগে সন্ত্রাসীরা স্থানীয় নাগরিক এবং পর্যটকদের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। হামলায় চারজন অংশ নিয়েছিল। এরমধ্যে আদিল ছিলেন স্থানীয়। বাকি তিনজন তার সহায়তায় পাহাড়ি পথ পেরিয়ে গন্তব্যে পৌঁছে।
ঘটনার দিন, স্থানীয় একটি দোকানের পেছন থেকে দুই সন্ত্রাসী বেরিয়ে আসে। প্রথমে তারা চারজনকে কাছ থেকে গুলি করে হত্যা করে। এ দৃশ্য ছড়িয়ে পড়লে আতঙ্কিত হয়ে বাকি পর্যটকরা এদিন-সেদিক ছুটতে থাকে। সেসময়, অন্য দুই জঙ্গি গুলি চালাতে শুরু করে। হামলায় একে-৪৭ ও এম৪ রাইফেল ব্যবহৃত হয়েছে।
এদিকে, পেহেলগামে হামলার পর পাকিস্তানকে দায়ী করে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাকিস্তানিদের ফিরে যেতে বলা হয়েছে। সব ধরনের বাতিল হয়েছে ভিসা। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতও করেছে ভারত।
পাল্টা ব্যবস্থা হিসাবে একই ধরনের পদক্ষেপ দিয়েছে পাকিস্তানও। সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতে ভারতের সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। এ ছাড়া পাকিস্তানের আকাশসীমা নিষিদ্ধ, সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ জানান, সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিতের পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে দেখছে পাকিস্তান। তিনি বলেছেন, যেকোনো মূল্যে নিজের পানির অধিকার রক্ষা করবে পাকিস্তান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর থেকে প্রতিটি ভারতীয় নাগরিকের ‘রক্ত ফুটছে’। হামলায় জড়িত প্রত্যেককে কঠিনতম শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।