নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষিকার আপত্তিকর ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এমন ভিডিও’র ফলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
মঙ্গলবার (৪ জুলাই) বিকেলে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী। এছাড়া ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পক্ষে শেখর আহমেদ নামের এক ব্যক্তি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয় একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ বিদ্যালয়টি তিনটি ইউনিয়নের শেষ সীমানায় ছোট যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় তিন ইউনিয়ন থেকেই এ স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তি হয়ে থাকে। কিন্তু বিগত কয়েক বছর যাবত প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদ (মিঠু) বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। এসব ঘটনায় তাকে কয়েকবার বিচারের মুখোমুখি হতে হয়েছে।
সম্প্রতি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকার সঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অফিস রুমে অনৈতিক কার্যকলাপ করে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। এ ঘটনার পর ম্যানেজিং কমিটির কাছে একটি অভিযোগ দেওয়া হয়। তাতে কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
অভিযোগকারী শেখর আহমেদ বলেন, ম্যানেজিং কমিটি একটি পুতুল কমিটি হিসেবে রয়েছে। বিগত কয়েক বছর যাবত অভিভাবকের আশা-আকাঙ্খার কমিটি গঠন হয়নি। এ অবস্থায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদের (মিঠু) সঙ্গে সহকারী শিক্ষিকার অসামাজিক ও অনৈতিক কার্যকলাপের ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছি।
তিনি আরও বলেন, গত দুই বছর আগে ভগবানপুর গ্রামের এক ছাত্রীকে শিক্ষাসফরে নিয়ে গিয়ে অনৈতিক কার্যকলাপ করে। এলাকায় এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে মান-সম্মানের ভয়ে ওই ছাত্রীর অভিভাবক বিয়ে দিয়ে দেন। গত বছর বসন্তপুর গ্রামের এক ছাত্রীর সঙ্গে একই ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় মেয়ের পরিবার মামলা করতে চাইলে ১০ লাখ টাকা দিয়ে তা থামাচাপা দেন। এমন বেশ কয়েকটি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত প্রধান শিক্ষক মিঠু। আমি এলাকার একজন সচেতন মানুষ হিসাবে এ ঘটনার ভিডিও ক্লিপ দেখে বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা চাই।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, প্রধান আবু সাদাত শামিম আহমেদ (মিঠু) তার অফিস রুমে চেয়ারে বসা ছিল এবং পাশের চেয়ারে বসেছিলেন সহকারী শিক্ষিকা। এর কিছুক্ষণ পর প্রধান শিক্ষক মিঠু চেয়ার থেকে উঠে এসে সহকারী শিক্ষিকার শরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। উভয়ের সম্মতিতেই আপত্তিকর এমন বেশ কয়েকটি (১০টি) ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষিকা (ইংরেজি) তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ মিথ্যে দাবি করে বলেন, কে বা কারা আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যে অভিযোগ তুলেছেন জানি না।
তবে ভিডিওর বিষয়ে তিনি কোনো সঠিক উত্তর দিতে পারে নাই।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদ’র (মিঠু) মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি এবং বুধবার তার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রশাসক (ডিসি) খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, অভিযোগটি এখনও আমার হাতে আসেনি। হাতে এলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।