টাকা আত্মসাৎ, ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে ‘মিসেস এশিয়া বাংলাদেশ-২০২২’র আয়োজক প্রতিষ্ঠান অপূর্ব ডটকমের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন খাদিজা আকতার রাহা। গেল ১১ নভেম্বর রাজধানীতে অনুষ্ঠিত ‘মিসেস ইউনিভার্সেস বাংলাদেশ-২০২২’ প্রতিযোগিতার ‘মিসেস এশিয়া বাংলাদেশ-২০২২’ বিভাগে বিজয়ী হন তিনি।
গত রোববার সন্ধ্যায় সুন্দরী অপূর্ব ডটকমের মালিক অপূর্ব আবদুল লতিফ ও তার স্ত্রী আফসানা হেলালি ওরফে জোনাকির নামে গুলশান থানায় এ জিডি করেন। জিডি নম্বর ১৯৪৪/২৭-১১-২০২২। গণমাধ্যমকে জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুলশান থানার উপপরিদর্শক মো. ফাইজুল হক।
জিডিতে রাহা উল্লেখ করেন, মিসেস এশিয়া নির্বাচিত হওয়ার পর ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া থাইল্যান্ডে ‘মিসেস এশিয়া ইন্টারন্যাশনাল ২০২২’ অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা ছিল তার। সেখানে পাঠানোর কথা বলে অপূর্ব ডটকমের মালিক ও তার স্ত্রী ভিসা, বিমানভাড়া, খাওয়াদাওয়া, থাকা ও অনুষ্ঠানের জন্য পোশাক কেনা বাবদ তার কাছ থেকে ছয় লাখ টাকা ও পাসপোর্ট নিয়েছেন। কিন্তু দিন যতই ঘনিয়ে আসছিল কোনো খবর পাচ্ছিলেন না তিনি। এরপর বিষয়টির খোঁজখবর নিতে গেলে গেলে তাকে আরও ১৪ লাখ টাকা দিতে বলেন আয়োজকেরা।
রাহা গণমাধ্যমকে বলেন, “গত ১১ নভেম্বর ‘মিসেস এশিয়া ২০২২’ প্রতিযোগিতার জন্য বাংলাদেশ থেকে বিজয়ী হই। তার আগে ৮ নভেম্বর আমার থেকে ছয় লাখ টাকা নেন আয়োজক অপূর্ব। বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে ২০ নভেম্বর থাইল্যান্ড যাওয়ার কথা ছিল। সে জন্য আমার পাসপোর্ট নেওয়া হয়। তখন বলেন, কোনো স্পন্সর পাইনি। সেজন্য ১০ দিনের জন্য সেলফ স্পন্সর করতে বলা হয়। যার মধ্যে ছিল ভিসা প্রসেস, যাতায়াত, হোটেল, ৫০টির মতো ড্রেস, জুতা এবং কিছু অনুশীলন; সবকিছু বাবদ আমাকে ছয় লাখ টাকা স্পন্সর করতে বলেন।”
রাহা আরও বলেন, ‘অপূর্ব ডট কমের মালিক অপূর্ব আবদুল লতিফ ও তার স্ত্রী তাদের দুজনের আশ্বাসে টাকা দেই। কিন্তু তারা আমার ভিসা করেননি। পরে খোঁজ নিলে, তারা আমাকে জানায় আরও চৌদ্দ লাখ টাকা দিতে হবে। তখন আমার মনে সন্দেহ লাগে। পরে তারা আমাকে মেসেজ পাঠান, পুরো টাকা না দেওয়ায় আমার সেখানে যাওয়া হচ্ছে না। পরে ছয় লাখ টাকা ফেরত চাইলে আমার সঙ্গে বিভিন্ন টালবাহানা শুরু করেন এবং টাকা দিতে অস্বীকার করেন।’
তবে রাহার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অপূর্ব। তিনি বলেন, ‘যে টাকা নিয়েছি সেটা স্পন্সর যিনি করেছেন, তার কাছ থেকে নিয়েছি। কোনো প্রতিযোগীর কাছ থেকে নয়। যে স্পন্সরের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি তাকে যথাযথ মানি রিসিট দিয়েছি। তার (রাহা) সঙ্গে থেকে কোনোধরনের টাকা-পয়সার লেনদেন করা হয়নি।’
অপূর্বর দাবি, রাহা যথাযথ কোনো প্রমাণ দেখাতে পারবেন না। যে অভিযোগ তিনি তুলছেন পুরোপুরি মিথ্যে ও বানোয়াট। বিষয়টি নিয়ে দরকার পড়লে আইনি প্রক্রিয়ায় লড়বেন বলেও জানান তিনি।