কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলায় মো. ফরহাদ (১৬) নামে এক তরুণকে অপহরণের পর মুক্তিপণের টাকা আনতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েছেন এক অপহরণকারী। মঙ্গলবার (১৬ মে) বিকেলে জেলার দেবিদ্বার উপজেলার মাশিকাড়া এলাকা থেকে অপহরণকারী আশরাফুলকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় স্থানীয়রা।
বুধবার (১৭ মে) বিষয়টি নিশ্চিত করেন দেবিদ্বার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কমল কৃষ্ণ ধর। এ ঘটনায় অপহৃত ফরহাদের বাবা জামাল হোসেন বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার আসামিরা হলেন, আশরাফুল ইসলাম (২০), মাশিকাড়া গ্রামের আবুল কালামের ছেলে মাহাবুব (২৩), একই গ্রামের মুকবুল হোসেন (২১), আবির হোসেন (২০) ও কাকসার গ্রামের শাহ আলমের ছেলে জুয়েল রানাসহ (২৫) পাঁচ জনকে আসামি করে দেবিদ্বার থানায় মামলা করেন।
মামলা ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, সোমবার বিকেলে ফরহাদ তার নানার বাড়ি মুরাদনগর উপজেলার পাঁচকুড়ি গ্রামে যাওয়ার পথে কাচিসাইর বাজার এলাকায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী তার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। কিছুদূর যাওয়ার পর তাকে ডেকে নিয়ে মোবাইল ফোন ফেরত দেওয়ার শর্তে মোটরসাইকেলে উঠতে বলে। মোটরসাইকেলে ওঠার পর তাকে অপহরণ করে নিয়ে যায় তারা। বিকেল সাড়ে ৫টায় ওই মোবাইল ফোন থেকে তার বাবার কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে ২০ হাজার টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। ১০ হাজার টাকা তাদের পাঠানো বিকাশ নম্বরে পাঠিয়ে ওই নম্বরে কল করে অবস্থান জানতে চান ফরহাদের বাবা। পরে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মাশিকাড়া বাজারের বিকাশ দোকানের মালিক লাভলুকে টাকা নিতে আসা লোকদের আটকে রাখার অনুরোধ করেন ফরহাদের বাবা।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে রাতে বাকি টাকা নিতে এলে অপহরণকারী আশরাফুল ইসলামকে আটক করে ফরহাদের বাবাকে কল দেন বিকাশের দোকানি। তিনি তখন ঘটনাস্থলের আশপাশেই ছিলেন। পরে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করলে দেবিদ্বার থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল থেকে ওই যুবককে থানায় নিয়ে যায়।
এদিকে টাকা আনতে গিয়ে এক সদস্য আটক হওয়ার সংবাদে চক্রের বাকি সদস্যরা অপহৃত ফরহাদকে মারধর করে উপজেলার কাশারিখোলা গ্রামের নির্জন এলাকায় মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে যায়। পরে রাত সাড়ে ১০টায় ছেলের মোবাইল ফোন থেকে কল পেয়ে এলাকার লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাকে উদ্ধার করেন ভুক্তভোগীর বাবা। ফরহাদ বর্তমানে দেবিদ্বার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ওসি আরও বলেন, ঘটনায় আটককৃত অপহরণকারী আশরাফুল ঘটনার কথা স্বীকার করেছেন। তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।