সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় পিকআপের ধাক্কায় আইয়ুব আলী রিয়াদ (৩০) নামে এক ফার্নিচার শ্রমিক মোটরসাইকেলের ওপর পড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন। ঘাতক পিকআপ নিয়ে চালক পালিয়ে গেলে মোল্লা ফার্নিচার কারখানার পরিচালক আশিকুর রহমান ওই মোটরসাইকেল (মোটরসাইকেল আরোহীর নাম শামসুজ্জামান সজল) আরোহীকে অপহরণ করে কারখানায় নিয়ে বেধড়ক মারধর করে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। টাকার জন্য তার স্বজনদের খবর দিলে স্বজনরা আসলে তাদেরও মারধর করা হয়।
হাইওয়ে পুলিশের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল ক্যাম্পের ট্রাফিক পরিদর্শক মশিউর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই পরিচালককে আটক করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ আলী মোল্লার কাছে হস্তান্তর করেন। পরে তাকে পুলিশের ভ্যানে করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে দীর্ঘক্ষণ ওসির কক্ষে দেন-দরবারের পর ফার্নিচার কারখানার পরিচালক আশিকুর রহমানকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ফার্নিচার শ্রমিক রিয়াদ রাস্তা পার হওয়ার সময় একটি পিক-প এসে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে সে ছিটকে একটি মোটরসাইকেলের ওপর গিয়ে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার পর পর পিকআপ নিয়ে চালক দ্রুত পালিয়ে যায়। এ বিষয়ে শিমরাইল ট্রাফিক ক্যাম্পের টিআই মশিউর আলম বলেন, মোটরসাইকেল আরোহীকে অন্যায়ভাবে ফার্নিচার কারখানায় নিয়ে জিম্মি করে পরিচালক ও অন্যান্যারা মারধর করে ২০ লাখ দাবি করে। আমরা কারখানার পরিচালক আশিকুর রহমান ও ভিকটিম সজলকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার এসআই ফিরোজ আলী মোল্লার কাছে হস্তান্তর করি।
মোটরসাইকেল আরোহী শামসুজ্জামান সজল জানান, বিনা কারণে তাকে এবং তার স্বজনদের ফার্নিচার কারখানায় আটকে মারধর করা করে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরে স্বজনরা ৯৯৯ এর মাধ্যমে পুলিশে খবর দিলে হাইওয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এবং কারখানার পরিচালক আশিকুর রহমানকে আটক করে পুলিশের ভ্যানে করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পাঠিয়ে দেয়। থানায় নেওয়ার পর ওসির কক্ষে কারখানার পরিচালক আশিকুর রহমানের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ দেনদরবারের পর মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাকে (আশিকুর রহমান) ছেড়ে দেওয়া হয়। পরিচালকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে চাইলে পুলিশ নেয়নি। রাত ১২টা পর্যন্ত থানায় অপেক্ষা করে শামসুজ্জামান সজলসহ তার স্বজনরা বাসায় ফিরে যান।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক ( এসআই) ফিরোজ আলী মোল্লা জানান, আমি দু’জনকে থানায় রেখে আসছি। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।
এ বিষয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, কোনো অপহরণের আসামিকে থানয় দেওয়া হয়নি। হাইওয়ে পুলিশ হয়তো ভুল বলেছে। একটি দুর্ঘটনার ঘটনা আমার জানা আছে, এর বেশি কিছু জানি না।