মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস, দুর্নীতি-অপশাসনের তথ্য আড়াল করতে সরকার নতুন দুইটি ‘নিবর্তনমূলক’ নীতিমালা করেছে অভিযোগ করে অবিলম্বে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নির্বতনমূলক এই নীতিমালা দুইটি হচ্ছে, ‘দ্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন কমিশন রেগুলেশন ফর ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যান্ড ওটিটি প্ল্যাটফর্মস-২০২১’ এবং ‘ওভার দ্য টপ(ওটিটি) কনটেন্টভিত্তিক পরিসেবা প্রদান এবং পরিচালনা নীতিমালা-২০২১’।
‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট পোক্ত করতেই এই দুইটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে যাতে করে আরও শক্ত করে ধরা যায়। দেশের জনগণের বাক স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখতে, সংবাদপত্র, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া, সামাজিক মাধ্যম এবং দেশি-বিদেশি ওটিটি প্ল্যাটফর্মের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখতে বিটিআরসি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এই দুই নীতিমামলাসহ ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।’ এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন তো খসড়া করেছে। এটা যদি দেখি যে, সরকার এই নীতিমালাকে গ্রহণ করে ব্যবস্থা নিচ্ছে তখন তো আমরা অবশ্যই কর্মসূচি দেবো।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই দুইটি নীতিমালা শুধুমাত্র বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে বাক ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারের সাথে সাংঘর্ষিকই নয়, বরং জাতিসংঘ ঘোষিত ইউনিভার্সেল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস (ইউডিএইচআর) এবং ইন্টারন্যাশনাল কনভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস(আইসিসিপিআর) এর পরিপন্থী। সেইসাথে জাতিসংঘের অনুমোদিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ম্যানিলা প্রিন্সিপাল এবং সান্তা ক্লারা প্রিন্সিপালের সিদ্ধান্তের দৃষ্টিতে দেখলে এই দুইটি নীতিমালা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এই নীতিমালা প্রণয়নের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হচ্ছে সত্যকে আড়াল করে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যমে জনগণের কণ্ঠরুদ্ধ করে একদলীয় বাকশালী কায়দায় ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা।’
তিনি বলেন, ‘এই নির্বতনমূলক নীতিমালা কার্যকর হলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দেশি-বিদেশী অনলাইন ভিত্তিক মিডিয়াগুলোর মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং গোপনীয়তার অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করবে। পাশাপাশি অনলাইন এনক্রিপশন অকার্যকর করে নিরাপত্তাকে দুর্বল করে ফেলবে। এর ফলে মানবাধিকারের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে।’