এক সপ্তাহ পর শুরু হবে মাধ্যমিকের বার্ষিক পরীক্ষা ও সামষ্টিক মূল্যায়ন। শেষ সময়ে শিক্ষার্থীদের নানা ধরনের দিকনির্দেশনা দেবেন শ্রেণি শিক্ষকরা। তাই বিএনপি-জামায়াতের ডাকা তিনদিনের অবরোধেও ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো।
এদিকে, মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নারায়ণগঞ্জ রুটের বিআরটিসি বাসে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে অল্পের জন্য হামলা থেকে রক্ষা পেয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ পরিস্থিতিতে চরম উৎকণ্ঠায় পড়েছেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।
তবে দেশের ইংরেজি মাধ্যমসহ অনেক বেসরকারি স্কুল-কলেজে সশরীরে ক্লাস বন্ধ রয়েছে। সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভার্চুয়ালি ক্লাস করার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তবে সরকারি-বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরোধের মধ্যেও ক্লাস-পরীক্ষা চলবে বলে জানানো হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে সব স্তুরের ক্লাস ও পরীক্ষা চালিয়ে যেতে বলা হয়েছে। তবে কোনো অভিভাবক যদি তার সন্তানকে স্কুলে না পাঠায় তবে তাকে অ্যাভসেন্স (অনুপস্থিত) দেওয়া যাবে না। এ সংখ্যা যদি বেশি হয় তবে তাদের জন্য ভার্চুয়ালি ক্লাস করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর বেলাল হোসাইন বলেন, বছরের শেষপ্রান্তে বার্ষিক ও সামষ্টিক মূল্যায়নের সময়ে এসে রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা যায় না। তাই অবরোধের মধ্যেও ক্লাস চালিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তবে কোনো অভিভাবক যদি তার সন্তানকে না পাঠায় তবে তাকে অনুপস্থিত দেওয়া যাবে না।
তিনি বলেন, কোনো বেসরকারি স্কুল যদি চায় সশরীরে ক্লাস না নিয়ে ভার্চুয়ালি নেবে সেটি তারা করতে পারবে।
জানতে চাইলে অভিভাবক ঐক্য ফোরামের চেয়ারম্যান জিয়াউল কবির দুলু ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা যেমন ক্ষতি, তেমনি বাচ্চাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করলে স্কুল বন্ধ রাখা উচিত। নভেম্বর মাসে সব স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোকে বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত।
ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার প্রধান জগদীশ চন্দ্র পাল বলেন, স্কুল বন্ধ রাখার কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি। তাই আজ যথারীতি ক্লাস হয়েছে। সামনে দুইদিনও ক্লাস হবে।
শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি জানান, সেটি তো আছেই। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা থাকায় শিক্ষার্থীরা নিরাপদে আসা-যাওয়া করছে।
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান বলেন, অবরোধের মধ্যেও স্কুলের উপস্থিতি ছিল স্বাভাবিক। স্কুলের পক্ষ থেকে অভিভাবকদের বলা হয়েছে, সবাই সচেতন থাকবেন এবং স্কুল আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে মূল রাস্তার পরিবর্তে অলিগলি ব্যবহার করবেন। আশা করি কোনো সমস্যা হবে না।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, সরকারের পদত্যাগ ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) ভোর থেকে তিন দিনব্যাপী সারা দেশে সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি করেছে বিএনপি-জামায়াত ও বিরোধী দলগুলো। তিনদিনের এ অবরোধ কর্মসূচি চলবে ২ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) পর্যন্ত।