জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), ১৯৭২—এ বড় সংশোধনী প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হয়েছে। ভোটে অনিয়ম হলে পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা পাচ্ছে না নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যদিও প্রাথমিক সংশোধনী প্রস্তাবে ইসি পুরো আসনের নির্বাচন বা ফল বাতিলের ক্ষমতা চেয়েছিল।
চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তাব অনুযায়ী, নির্বাচন চলাকালে কোনো ভোটকেন্দ্রে বড় ধরনের অনিয়ম, কারসাজি ও ভোট প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়ার প্রমাণ পেলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সেই কেন্দ্রের ভোট বা ফল বাতিল করে পুনরায় ভোট গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারবে। তবে পুরো আসনের ফল বাতিল করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের বেসরকারি ফল প্রকাশের পরও এই ক্ষমতা প্রয়োগ করা যাবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মে) বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে বিকেলে সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন বিস্তারিত তুলে ধরে এই তথ্য জানান।
মন্ত্রিসভা-বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০২৩ সালের প্রথম ত্রৈমাসিক (জানুয়ারি-মার্চ) প্রতিবেদন উল্লেখ করে মো. মাহবুব হোসেন জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে মন্ত্রিসভার বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৬৪ দশমিক ৮১ শতাংশ।
তিনি জানান, সরকারের ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ প্রান্তিকে (১ জানুয়ারি ২০২৩ থেকে ৩১ মার্চ ২০২৩ পর্যন্ত) মন্ত্রিসভার ৬টি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত ৫৪টি। বাস্তবায়িত সিদ্ধান্ত ৩৫টি (৬৪.৮১ শতাংশ)। বাস্তবায়নাধীন সিদ্ধান্ত ১৯টি (৩৫.১৯ শতাংশ)।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও জানান, এ সময়ে অনুমোদিত নীতি/কর্মকৌশল ২টি। অনুমোদিত চুক্তি/প্রটোকল ২টি। সংসদে পাস হওয়া আইন ১০টি।
এর আগে, গত ২৮ মার্চ সংশোধনী প্রস্তাবটি নীতিগত অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হয়েছিল। এতে উল্লেখ ছিল, কোনো ভোটকেন্দ্রে, এমনকি পুরো নির্বাচনী এলাকার (আসন) ভোটে বড় ধরনের অনিয়ম, কারসাজি ও ভোটের প্রক্রিয়ায় বাধা দেওয়ার প্রমাণ পেলে গেজেট প্রকাশ স্থগিত এবং ভোট বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্দেশ দিতে পারবে ইসি। সেই প্রস্তাবে সায় দেয়নি মন্ত্রিসভা। প্রস্তাব পুনর্গঠন করা সাপেক্ষে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। নতুন এই সংশোধনীর ফলে এখন আসনের পরিবর্তে কেন্দ্রের ভোট বাতিল করার ক্ষমতা পাবে ইসি।