আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যেসব পত্রিকা নিয়মিত বের হয় না সেগুলো চিহ্নিত করেছি আমরা। ইতিমধ্যেই অনিয়মিত চার শতাধিক পত্রিকা চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০ পত্রিকার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীতে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ (বিএসপি) আয়োজিত বার্ষিক সাধারণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদপত্র পরিষদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সাড়ে ১২০০ পত্রিকা, অথচ পশ্চিমবঙ্গের দিকে তাকালে দেখি সেখানে এতো পত্রিকা নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদপত্রবান্ধব, সাংবাদিকবান্ধব সে কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে অনেক পত্রিকার ডিক্লারেশন আছে কাগজে কিন্তু সেগুলো নিয়মিত বের হয় না, যেদিন বিজ্ঞাপন পায় সেদিন বের হয়। অনেক পত্রিকার যিনি সম্পাদক, তিনিই রিপোর্টার। অনেক পত্রিকায় দেখা যায় যে, সাংবাদিক নিয়োগ দেওয়া হয় কিন্তু তাদের বেতন দেওয়া হয় না, বলা হয় যে তোমার বেতন তুমি সংগ্রহ কর।
জাতীয় দিবসগুলোতে এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ দিবসে পত্রিকায় ছাপানোর জন্য ক্রোড়পত্র প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, বৈশ্বিক যে অবস্থা বিরাজমান সেটি আপনারা জানেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দসীমার কথাও আপনারা জানেন। কোনো কোনো বড় পত্রিকার ১০-১২ কোটি টাকা বিলও বকেয়া রয়েছে। অবশ্য সরকারি বকেয়া বিল আজ হোক, কাল হোক অবশ্যই পাবেন। কিন্তু আগের মতো যথেচ্ছভাবে ক্রোড়পত্র দেওয়ার সুযোগ আর নেই।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমের কাজ মানুষের কাছে শুধু সংবাদ পরিবেশন করাই নয়, সমাজ ও জাতিকে পথ দেখানো, এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আর সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে হয়। মানুষ যদি স্বপ্ন না দেখে, যদি শুধু হতাশা দেখে, আশা না থাকে, সে এগুতে পারে না। সংবাদপত্র যদি ভালো সংবাদগুলো ভালো করে ছাপায় তাহলে জাতি স্বপ্ন দেখবে আশা থাকবে। দেশের সাফল্য, দেশ বদলে যাওয়ার কাহিনী, বিশ্ব কী বলছে, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, জাতিসংঘ কী বলছে, সেগুলো যদি আমরা সঠিকভাবে মানুষকে জানাই, মানুষ আশাবাদী হবে, স্বপ্ন দেখবে। সমাজে সমালোচনা থাকতে হবে, সমালোচনা তারই হবে যে দায়িত্বে থাকে, কিন্তু একই সঙ্গে ভালো কাজের প্রশংসাও থাকতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মহাসচিব ফখরুল সাহেব আজ বলেছেন, সমমনা দলগুলোকে নিয়ে আন্দোলনে নামবেন। ক’দিন আগে তিনিই বলেছিলেন, আন্দোলনে আছেন, আবার এখন বলছেন নামবেন, কোনটা সঠিক সেটা বোঝা মুশকিল। গত সাড়ে ১৩ বছর ধরে আমরা শুনছি তারা আন্দোলনে নামবেন। আর তাদের আন্দোলন মানে হচ্ছে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করা, গাড়ি ভাঙচুর, নিজেরা নিজেরা মারামারি করা, পুলিশের ওপর হামলা করা। এবার যদি এগুলো করা হয় তাহলে জনগণ তাদের প্রতিহত করবে এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের পাশে থাকবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রেস কাউন্সিলের সদস্য এবং দৈনিক প্রভাতের সম্পাদক মোজাফফর হোসেন পল্টু। এ সময় বক্তব্য রাখেন প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি নিজামুল হক, সচিব মো. শাহ আলম, গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. জসীম উদ্দিন, বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ শাহ জালাল প্রমুখ।