বাংলাদেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং মানবাধিকার সংস্থা অধিকার নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রস্তাবে চরম হতাশা প্রকাশ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এই প্রস্তাবকে ‘পক্ষপাতমূলক’ এবং ‘একটি সার্বভৌম দেশের স্বাধীন বিচার ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের এক বিৃবতিতে।
বৃহস্পতিবারের ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যে সময়ে এবং যে ভাষায় যৌথ প্রস্তাবটি ইউরোপীয় পার্লামেন্টে উত্থাপন করা হয়েছে, তা আসলে একটি বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মন্তব্য করা এবং একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের বিচারব্যবস্থায় হস্তক্ষেপের শামিল।’
‘বিশেষ করে মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকারের’ প্রতি ইউরোপীয় পার্লামেন্টের পক্ষপাতিত্বে বাংলাদেশ হতবাক। কারণ সংস্থাটি একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক মতার্দশের অন্ধ সমর্থক এবং এর বিরুদ্ধে অতীতে ভুল তথ্য ছড়ানোর মাধ্যমে দেশজুড়ে সন্ত্রাসবাদ ও ভয়াবহ উগ্রপন্থা ছড়ানোর প্রমাণ রয়েছে।’
প্রসঙ্গত, ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) আইনসভা ইউরোপীয় পার্লামেন্টে সম্প্রতি এক যৌথ প্রস্তাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এক যৌথ প্রস্তাবে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির অবনতিতে গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে। প্রস্তাবে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার চর্চার বিষয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুসরণের আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, মানবাধিকারকর্মী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের কাজের নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে।
‘বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশেষ করে অধিকারের মামলা’ শীর্ষক সেই যৌথ প্রস্তাবের এক অংশে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিচারবহির্ভূত হত্যা, বলপূর্বক অন্তর্ধান বা গুম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শ্রমিকদের অধিকার খর্ব করাসহ বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে।
দ্বিতীয় অংশে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা ‘অধিকার’ নিয়ে। প্রস্তাবের ওই অংশে অধিকারের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা আদিলুর রহমান খান ও এএসএম নাসিরউদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অবিলম্বে নিঃশর্ত প্রত্যাহার এবং সংগঠনটির নিবন্ধন পুনরায় চালু করতে আহ্বান জানানো হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি।
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মধ্য ডানপন্থী, সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট, বামপন্থীসহ সাতটি গ্রুপ উত্থাপন প্রস্তাব এনেছে। ফ্রান্সের স্ত্রাসবুর্গে স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার রাতে প্রস্তাবটি নিয়ে পার্লামেন্ট অধিবেশনের বিতর্কে তাদের মধ্যে ছয়টি গ্রুপ অংশও নিয়েছে।
স্ত্রাসবুর্গের স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এই প্রস্তাবের ওপর ভোট হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেশষ পর্যন্ত আর তা হয়নি বলে জানা গেছে।
